মস্কোয় কনসার্ট হলে হামলার জন্য রাশিয়া যখন ইউক্রেনের ওপর দায় চাপাচ্ছে, তখন নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। প্রথম থেকেই এই হামলার দায় স্বীকার করে আসছে সংগঠনটি। এ নিয়ে এর আগেও বিবৃতি দিয়েছে তারা।
গত শুক্রবার মস্কোর উত্তরে ক্রাসনোগোর্স্ক অঞ্চলে ক্রোকাস সিটি হলে ওই হামলা চালানো হয়। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪৩ জন নিহত হয়েছেন। হামলার পর আইএস জানিয়েছিল, ‘তাদের সঙ্গে (ইসলামবিরোধী) দেশগুলোর চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।’ হামলায় আইএসের জড়িত থাকার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
ইএস নতুন ভিডিওটি প্রকাশ করেছে সংগঠনটির পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘আমাক’-এ। তাতে দেখা যায়, ক্রোকাস সিটি হলে গানের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া লোকজনের ওপর নির্বিচার গুলি চালাচ্ছেন হামলাকারীরা। এতে অনেকে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ছেন। একপর্যায়ে এক বন্দুকধারীকে বলতে শোনা যায়, ‘ওদের মেরে ফেলো, কোনো দয়া দেখিয়ো না।’
শুক্রবারের ওই হামলার পর ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সন্দেহভাজন ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুশ গোয়েন্দারা। তাঁদের মধ্যে চারজন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। রুশ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির কর্মকর্তা আন্দ্রে পোপভ মনে করেন, এই হামলার পেছনে ইউক্রেন জড়িত, আইএস নয়। আর এতে অর্থায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষ্যও একই। আইএসের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাসীদের ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে কিয়েভ সরকার।’ যদিও রাশিয়ার এসব অভিযোগ নাকচ করেছে ইউক্রেন। কিয়েভের দাবি, এর মাধ্যমে দেশটিতে চলমান যুদ্ধের মাত্রা আরও বাড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছে মস্কো।
এদিকে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র আদ্রিয়েনে ওয়াটসন বলেছেন, মস্কোয় হামলার পেছনে শুধু আইএসের হাত রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবির পর ওয়াশিংটনের উদ্দেশে কড়া সুরে কথা বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। আজ রোববার তিনি বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘আমার আশা ছিল, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাদের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড রহস্য খুব দ্রুত সমাধান করবে। কিন্তু না, ৬০ বছরের বেশি সময় গড়িয়ে গেলেও, শেষ পর্যন্ত তাঁরা হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে পারেনি। নাকি ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইএস জড়িত ছিল?’
Post a Comment